
জমিদারি ও পরিচিতি
রাজশাহীর দুবলহাটি জমিদার পরিবার ছিল বৃহত্তর রাজশাহী জেলার সবচেয়ে প্রাচীন জমিদার বংশ। সেই পরিবারের অন্যতম কৃতী সদস্য ছিলেন জমিদার হরনাথ রায় চৌধুরী।
তাঁর জমিদারি তৎকালীন রাজশাহী ছাড়াও বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর এবং সিলেট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
তিনি শুধু জমিদার হিসেবেই নন, বরং জনহিতকর কাজের জন্য মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। বিশেষ করে ১৮৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে তাঁর ত্রাণ ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড তাঁকে অসামান্য মর্যাদায় উন্নীত করে। এজন্য ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৮৭৫ সালে “রাজা” এবং ১৮৭৭ সালে “রাজা বাহাদুর” উপাধিতে ভূষিত করে।
জমিদার হরনাথ রায় এর শিক্ষা ও জনকল্যাণে অবদান
যদিও তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন না, তবুও শিক্ষার প্রতি ছিল গভীর অনুরাগ। তাঁর অবদান রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে—
- ১৮৬৪ সালে দুবলহাটিতে প্রতিষ্ঠা করেন একটি অবৈতনিক নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি বিদ্যালয়।
- ১৮৭৩ সালে রাজশাহী জেলা স্কুলকে কলেজে উন্নীত করার লক্ষ্যে দান করেন বার্ষিক ৫,০০০ টাকা আয়ের সম্পত্তি, যার মূল্য তখন প্রায় এক লক্ষ টাকা।
- দুবলহাটিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি অতিথিশালাও, যা যাত্রী ও পথিকদের জন্য আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
এইসব কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, জমিদার হয়েও তিনি প্রজাদের কল্যাণকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছিলেন।
জীবনাবসান
এই মহান দানশীল ও মানবপ্রেমী জমিদার ১৮৯১ সালে পরলোকগমন করেন। তবে আজও রাজশাহীর ইতিহাসে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন শিক্ষা ও জনহিতকর কাজের অগ্রদূত হিসেবে।



